নিউজবাংলা২৪ডটনেট:: নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়ার দেয়া প্রস্তাবের মধ্য দিয়ে দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকটের সমাধানে সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজীনা। বিএনপির চেয়ারপারসন ও বিরোধী দলীয় নেতা খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক শেষে এ মন্তব্য করেন মজীনা। সোমবার রাত সাতটা থেকে আটটা পর্যন্ত গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিএনপির পক্ষে আরও ছিলেন ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান ও সাবিহউদ্দিন আহমেদ।
বৈঠক শেষে দুই নেত্রীর প্রস্তাবকে গঠনমূলক বলেও মন্তব্য করেন মজীনা। তিনি সাংবাদিকদের আরও বলেন, আশা করি, দুই দল দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করবে। আগামীতে সকল দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করে মজীনা বলেন, আমি বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারাও এতে একমত হয়েছেন।
বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠকে খালেদা জিয়া আগামী সরকার গঠন করতে পারলে বিএনপি সন্ত্রাসবাদ দমন ও প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আরও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলবেন বলে জানিয়েছেন মজীনাকে। নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়ে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির কাছে এ সরকারে তাদের প্রতিনিধিদের নাম চেয়ে শুক্রবার জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ প্রস্তাবের জবাবে সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন ডেকে বিকল্প প্রস্তাব দেন খালেদা জিয়া। তার প্রস্তাবিত নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকারের ১০ জন উপদেষ্টা নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের দুটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ২০ উপদেষ্টার মধ্য থেকে। এ ১০ জনের ৫ জন করে প্রস্তাব করবে সরকারি ও বিরোধী দল। একজন সম্মানিত নাগরিক হবেন এই সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, যাকে নির্বাচিত করা হবে সরকার ও বিরোধীদল উভয়পক্ষের ঐকমত্যের ভিত্তিতে। সংসদ ভেঙ্গে যাওয়ার আগেই এই সরকারের সদস্যদের সংসদের মাধ্যমে নির্বাচিত করে নেওয়ারও প্রস্তাব দেন খালেদা।
রোববারও খালেদা জিয়া নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে অনড় অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন। আর সোমবার প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবের পাল্টা বিকল্প প্রস্তাবেও তিনি বাতিল হয়ে যাওয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলেই নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন।
অন্যদিকে সংলাপ-সমঝোতার ভিত্তিতে যাতে রাজনৈতিক সংকট দূর হয় এবং সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন হয় সেজন্য তৎপর বিদেশি কূটনৈতিকসহ দাতা দেশ-সংস্থাগুলো। এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও নেতৃস্থানীয় ভূমিকা রাখছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত মজীনা। চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তাই খালেদা-মজীনা বৈঠকটিকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।