খুলনায় করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার থেকে মহানগরীর দোকানপাট বন্ধের নির্দেশ
নিউজবাংলা২৪ডটনেট:: খুলনায় অল্প সময়ে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আগামী বৃহস্পতিবার (১১ জুন) থেকে খুলনা মহানগরীর দোকানপাট বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নগরীর ফুটপাথেও কোনো হকার অবস্থান করবে না। নগরীতে ইজিবাইকসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচলও সীমিত করা হবে।
মঙ্গলবার (৯ জুন) দুপুরে স্থানীয় সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে খুলনা জেলা করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে গঠিত কমিটির সভায় এসকল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন।
সভায় বলা হয়, মানুষের ভিড়, মাস্ক ছাড়া চলাচল বরদাশত করা হবে না। মাস্ক ব্যবহারের নামে নাক-মুখ উন্মুক্ত থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সভায় আরো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অধিক সংখ্যক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্তের লক্ষ্যে খুলনা মেডিক্যাল কলেজে আরো একটি পিসিআর মেশিন স্থাপন করা হবে। বর্তমানে ওই ল্যাবে দৈনিক সর্বোচ্চ ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষা করা যায়, যা যথেষ্ট নয়। এছাড়া সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজেও একটি করোনা ভাইরাস পরীক্ষার ল্যাব স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এছাড়া খুলনায় ক্রমাগতভাবে কোভিড-১৯ রোগী বাড়তে থাকলে তাদের চিকিৎসায় খুলনা সদর (জেনারেল) হাসপাতালের চতুর্থ তলায় ৪২টি বেড প্রস্তত করে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে। কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত রোগীর শ্বাসকষ্ট লাঘবে ডায়াবেটিক হাসপাতালে দুটি অক্সিজেন হাই ফ্লো নজেল ক্যানেল ক্রয়েরও সিদ্ধান্ত হয়। কোভিড-১৯ রোগীদের কিডনি ডায়ালাইসিসের প্রয়োজন পড়লে শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের পাঁচটি ডায়ালাইসিস বেড ব্যবহার করা হবে। খুলনার সকল বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডারগুলো সংগ্রহ করে খুলনা কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আনা হবে। করোনা ভাইরাস নমুনা সংগ্রহের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে আরো একটি গাড়ি সিভিল সার্জনকে দেওয়া হবে।
সিদ্ধান্তের মধ্যে আরো রয়েছে, নগরীর রয়্যাল মোড়ে অবস্থিত দূরপাল্লার গাড়িগুলোর কাউন্টার থেকে যাত্রী উঠা-নামা বন্ধ থাকবে। ১১ হতে ২৫ জুন পর্যন্ত ভ্রাম্যমাণ আদালতের সংখ্যা ও কার্যক্রম বাড়ানো হবে। সন্ধ্যার পর চলাচল বন্ধ থাকবে। ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান এবং জরুরি সেবা বাদে সকল দোকানপাট বন্ধ থাকবে।
সভায় জানানো হয়, এই মুহূর্তে খুলনায় ২১৭ জন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৪২ জনই খুলনা নগরীর।
সভায় খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, বিভাগীয় কমিশনার ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার ও খুলনা স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক ডা. রাশেদা সুলতানা উপস্থিত ছিলেন। সভায় ঢাকা থেকে অনলাইনে যুক্ত হন খুলনা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মো. কামাল হোসেন।
আরো উপস্থিত ছিলেন-অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সরদার রকিবুল ইসলাম, পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ, খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মুন্সী মো. রেজা সেকেন্দার, খুলনা মেডিক্যাল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ, খুলনার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ, খুলনা আঞ্চলিক তথ্য অফিসের উপপ্রধান তথ্য অফিসার ম. জাভেদ ইকবাল, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান খান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জিয়াউর রহমান, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপপরিচালক মো. আব্দুল আলিম, জেলা শিক্ষা অফিসার খোন্দকার রুহুল আমিন ও খুলনা প্রেসক্লাবে সভাপতি এসএম নজরুল ইসলাম প্রমুখ।