আজ বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমানের ৪২তম শাহাদত বার্ষিকী Reviewed by Momizat on . নিউজবাংলা২৪ডটনেট:: আজ সোমবার বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমানের ৪২তম শাহাদত বার্ষিকী । ১৯৭১ সালের এই দিনে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ধলই সীমান্তের চৌকি এলাকায় নিউজবাংলা২৪ডটনেট:: আজ সোমবার বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমানের ৪২তম শাহাদত বার্ষিকী । ১৯৭১ সালের এই দিনে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ধলই সীমান্তের চৌকি এলাকায় Rating: 0
You Are Here: Home » জাতীয় » আজ বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমানের ৪২তম শাহাদত বার্ষিকী

আজ বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমানের ৪২তম শাহাদত বার্ষিকী

Hamidur_Rahman_Birsershthoনিউজবাংলা২৪ডটনেট:: আজ সোমবার বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমানের ৪২তম শাহাদত বার্ষিকী । ১৯৭১ সালের এই দিনে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ধলই সীমান্তের চৌকি এলাকায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন তিনি।হামিদুর রহমান ১৯৪৫ সালে ভারতের চব্বিশ পরগনা জেলার চাপড়া থানার ডুমুরিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর বাবা আক্কাস আলী মন্ডল ও মা কায়ছুননেছা ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার খোর্দ্দখালিশপুর গ্রামে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। তার নামে খোর্দ্দখালিশপুর গ্রামটির নামকরণ করা হয়েছে হামিদনগর। ১৯৭১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে যোগ দেন হামিদুর রহমান।
এর পরপরই স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন তিনি। একাত্তরের ২৮ অক্টোবর ভোরে লে. কাইয়ুমের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল পাক সেনাদের ওপর চারদিক থেকে আক্রমণ চালায়। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় পাক সেনাদের ক্যাম্পে। এ সময় প্রচন্ড গোলাগুলি ও পাকবাহিনীর পুঁতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা হতাহত হন।
এমন পরিস্থিতিতে সিপাহী হামিদুর রহমান গোলাগুলির মধ্যেও হামাগুড়ি দিয়ে শত্রুদের অবস্থানের ৫০ গজের মধ্যে ঢুকে পড়েন। তার হাতের এলএমজি’র গুলিতে শত্রুদলের অধিনায়কসহ বেশ কয়েকজন প্রাণ হারান। হঠাৎ শত্রুদের একটি বুলেট হামিদুরের কপালে লাগে। কমলগঞ্জ উপজেলার ধলই সীমান্তের তৎকালীন ইপিআর ক্যাম্পের (বর্তমান বিডিআর ফাঁড়ি) সামনে শহীদ হন সিপাহী হামিদুর রহমান। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আমবাসা গ্রামের একটি মসজিদের পাশে ওই সময় বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহী হামিদুর রহমানকে দাফন করা হয়। ৩৬ বছর পর ২০০৭ সালের ১১ ডিসেম্বর তার দেহাবশেষ ভারতের ত্রিপুরা থেকে দেশে এনে ঢাকার মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী গোরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়।
এদিকে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায় এই বীরশ্রেষ্ঠের নিজ গ্রাম অনেকটা অবহেলিত। এলাকাবাসী জানান, গ্রামের নামকরণ খোর্দ্দ খালিশপুর থেকে হামিদনগর করা হলেও তা কাগজে কলমেই রয়ে গেছে। এখানে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের নামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কলেজ, স্মৃতি যাদুঘর ও গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত কলেজটি চলতি বছরের ১৪ মে সরকারী করা হলেও এখনও বেতন ভাতা পাচ্ছেন না শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ২০০৮ সালে কলেজ মাঠে হামিদুর রহমানের স্মৃতি সংরক্ষণে নির্মাণ করা হয় বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর ও গ্রন্থাগার। স্মৃতি জাদুঘর ও গ্রন্থাহারের ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, এই জাদুঘরে নেই তার তেমন কোন স্মৃতি। গ্রন্থাগারে ২ হাজার ৩শ’ ৪৯ টি বই থাকলেও অভাব রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্বলিত বইয়ের। ফলে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এখানকার মানুষ। এছাড়া এখানে কর্মকর্তারাও পাচ্ছেন না বেতন-ভাতা।
এই বীরশ্রেষ্ঠের পরিবার এখন অনেকটাই অবহেলিত। সরকারীভাবে যে সাহায্য দেওয়া হয় তা দিয়ে কোনরকমে তাদের সংসার চলে যায়। হামিদুর রহমানের ছোট ভাই ফজলুর রহমান বলেন, ১৯৮০ সালে পরিবারের সদস্যদের থাকার জন্য একটি ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হলেও সেটি আজ ভেঙে পড়ছে। এ মহান বীরের মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শুধুমাত্র মিলাদ মাহফিলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে বলে এলাকাবাসীর আক্ষেপ।
জেলা প্রশাসক শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, চলতি বছর মৃত্যুবার্ষিকী জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে পালনের জন্য আলোচনা সভা, দোয়া ও মিলাদ মাহফিলসহ ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। জেলার স্কুল ও কলেজগুলোতে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান কলেজ, স্মৃতি জাদুঘর ও গ্রন্থাগারে যে সকল সমস্যা রয়েছে তা দ্রুত সমাধান করা হবে।

About The Author

Number of Entries : 3373

Leave a Comment

Scroll to top