mosla_peyajশেখ জাহিদুল ইসলাম:: আর মাত্র কয়েকদিন পরেই কোরবানির ঈদ। এরই মধ্যে বাজারে মসলা ও পিয়াজের দামে লাফিয় লাফিয়ে বাড়ছে। আর সে কারণে ক্রেতা সাধারণের ভোগান্তি চরমে উঠছে। কিন্তু এই চড়া মূল্যের দায় নিতে রাজি নন ব্যবসায়ী বা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কেউ। একপক্ষ ঢালাওভাবে অন্যপক্ষকে দায়ী করছেন। এ বিষয়ে বারবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বললে তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে জানান ব্যবসায়ী সংগঠনটির সভাপতি। অপরদিকে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ সম্পূর্ণ অমূলক বলে দাবি করেছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মনোজ কুমার রায়।
মসলা ব্যবসায়ীরা  বলেন, এবারের কোরবানি ঈদে চোরাই পথে মসলা আসার কারণে ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছের স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে একাধিকবার ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানালে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি মন্ত্রণালয়। যার ভোগান্তি পোহাচ্ছি আমরা। বাণিজ্য মন্ত্রনালয় থেকে আমাদের কেবলই আশ্বাস দেওয়া হয়, নেয়া হয় না কোনো কার্যকর পদক্ষেপ।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, মসলার জন্য আমাদের সম্পূর্ণ আমদানির ওপরই নির্ভর করতে হয়। আর এবার ঈদ ও পূজো এক সাথে হওয়ায় ভারত থেকে মসলা বাংলাদেশের বাজারে আসছে না। ফলে দাম কিছুটা ওঠানামা করছে। আর ব্যবসায়ীরা বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না- তাহলে আমি বলব, আপনারা কি ব্যবস্থা নিতে বলেন তা নির্দিষ্ট করুন। পরে আমরা যদি পদক্ষেপ না নেই তাহলে তার দায় আমি অবশ্যই নেব।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবছর কোরবানি ঈদ মৌসুমে ৩ লাখ টন পেঁয়াজ, দেড় লাখ টন রসুন, ২ লাখ টন আদা, ১ লাখ টন হলুদ, ২০০ টন জিরা, ২০০ টন দারুচিনি, ২০০ টন কালো এলাচ এবং ২০০ টন সাদা এলাচ বিক্রি হয়ে থাকে।  বাংলাদেশের ৯০ ভাগ মসলাই আমদানি করতে হয়। আর এই আমদানি নির্ভরতার কারণে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব।
শ‍ুক্রবার কারওয়ান বাজার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি ধনিয়া ৯৫ টাকা,  জিরা ৪০০  টাকা, দারুচিনি ৩০০টাকা, এলাচি ১৮০০ টাকা থেকে ২০০০টাকা, লবঙ্গ ২০০০ টাকা, গোলমরিচ ১২০০টাকা, মরিচ ১৫০ টাকা থেকে ২২০ টাকা, রসুন ১২০ টাকা, হলুদ ১২০ টাকা, পেঁয়াজ ১০০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে পিয়াজের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। বর্তমানে পিয়াজের দাম স্বাভাবিক রাখেত টিসি পিয়াজ বিক্রির উদ্যোগ গ্রহণ করলেও রাস্তায় তেমনটা চোখে পড়ছে না। আর এ সুযোগে এক শ্রেনীর ব্যবসায়ীরা পিয়াজের দাম দ্বিগুণ হাকিয়ে বসে আছে। ঈদের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। কিন্তু পিয়াজের দাম আর কমছে না। ক্রেতা সাধারণ দিশে হারা হয়ে পড়েছে। আজ শনিবার ঢাকা, খুলনা, রাজশাহীসহ বিভিন্ন বিভাগীয় বাজার গুলতে ঘুরে দেখা গেছে এক কেজি দেশি পিয়াজ ৮৫ টাকা থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছে। এই দাম মানুষের নাগালে রাখার জন্য টিসিবি ৪৫ টাকা দরে বিদেশী পিয়াজ বিক্রির উদ্যেগ নিলেও বর্তমানে টিসির পিয়াজ মানুষ আজ আর চোখে দেখছে না শুধুই কানে শুনছে যে টিসিবি ৪৫ টাকা দরে পিয়াজ বিক্রি করছে। পিয়াজের এই অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি প্রতিরোধ না করা গেলে সাধারণ মানুষ চরম হয়রানির শিকার হবে। এদিকে পিয়াজ ব্যবসায়ী সুমন জানান, পিয়াজের সরবরাহ কম বলে বাজারে পিয়াজের দাম দ্বিগুণ, তবে ঈদের পর পিয়াজের দাম স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসবে বলে তিনি মনে করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *