নিউজবাংলা২৪ডটনেট:: নিউজিল্যান্ড ২০৬ রানের টার্গেটে মাঠে নামার পর পরই বাংলাদেশি পেসার রুবেল হোসেনের হ্যাটট্রিকসহ ছয় উইকেটে পাওয়ায় ২৯.৫ ওভারে ৯ উইকেটে ১৬২ রান করে নিউজিল্যান্ড। উইলিয়ামসন নামতে না পারায় ৪৩ রানের জয় পায় বাংলাদেশ।টসে হেরে বাংলাদেশের ইনিংসে শুরুতে চাপ, পরে ম্যাচে ফেরা, বড় স্কোর, বৃস্টির আক্রমণ, ম্যাচ বন্ধ, নতুন টার্গেট, পেসার রুবেলের হ্যাটট্রিক সবই হয়েছে প্রথম ম্যাচে। তবে শেষ হাসিটা হেসেছে মুশফিকরাই। ৪৩ রানের জয় তুলে মুশফিকরা সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে। ২০১০ সালের সেই সিরিজের থেকে এখন পর্যন্ত মুশফিকরা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টানা ৫ম জয়ে মুঠোবন্দি করেছে।
নিউজিল্যান্ডের ইনিংসের ২০ ওভার যেতে না যেতেই বৃষ্টির আক্রমণ। ১০ মিনিটের বৃষ্টি, খেলা বন্ধ রাখে এক ঘন্টার বেশি সময়। নিউজিল্যান্ডে বিপক্ষে টস হেরে মুশফিকরা সংগ্রহ করে ২৬৫ রান। আর জবাব দিতে নেমে নিউজিল্যান্ড বৃস্টির আগে করে ২০ ওভারে ৩ উইকেট ৮২ রান। নতুন টার্গেটে করতে হবে মোট ৩৩ ওভারে ২০৬ রান। হিসাব অনুযায়ী আরও ১৩ ওভারে ১২৪ রান।
২৬৬ রানের টার্গেট নিয়ে খেলতে নেমে নিউজিল্যান্ড দলীর ৯ রানেই ওপেনার রাদার্ফোটকে হারায়। এরপর ডেভচিকে হারায় দলের ৪৩ রানে। তৃতীয় উইকেট টেইলকে দলীয় ৬০ রানে। সন্ধ্যার পর বেশ ভাল ভাবেই চলছিল ম্যাচ। ২০ ওভারে ৮২ রানে দাঁড়িয়ে নিউজিল্যান্ড। দুই ব্যাটসম্যান এন্ডারসন ২০ রানে আর ইলিয়ট ২৮ রানে। ঠিক তখনই বৃস্টি আক্রমন। ম্যাচ বন্ধ হয়ে যায়। কর্তনকৃত ওভারের মাােচ ম্যাচ রেফারি ক্রিস বোর্ড ম্যাচের পরিধি কমিয়ে আনেন ৩৩ ওভারে। বৃস্টি থেমে যাবার পর মাঠ খেলার উপযোগি করতেই প্রায় এক ঘন্টা পনের মিনিট সময় লেগেছে গ্রাউন্ডম্যানদের। বৃস্টি থামার পর ম্যাচ রেফারি দুই আম্পায়দের সঙ্গে নিয়ে মাঠ পরিদর্শন করেন। রাত ৮টা ৫০ মিনিটে বৃস্টি বিঘ্নিত প্রথম ওয়ানডে ম্যাচের নতুন টার্গেট দেয়া হয় নিউজিল্যান্ডকে। ৩৩ ওভারে মোট ২০৬ রান। আগেই ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ছিল স্কোর ৮২। হিসাব অনুযায়ী ম্যাককুলামদের ১৩ ওভারে ১২৪ রান করতে হবে। ওভার প্রতি প্রায় ১০ রান।
এন্ডারসন আর ইলিয়ট তেড়ে ফুরে রিয়াদ-সোহাগকে চার-ছয় মারা শুরু করলে রান সংগ্রহ ওভার প্রতি দশের বেশি হয়ে যায়। ব্যাকফুটে চলে যায় বাংলাদেশ। পর পর তিন উইকেট শিকার করে হ্যাট্রিক অর্জন করলেন আর দলকে ম্যাচে ফেরালেন পেসার রুবেল। রুবেল হলেন দেশের তৃতীয় বোলার ওডিআই ম্যাচে হ্যাট্রিক অর্জনকারী। শেষ অবদি নিউজিল্যান্ড ৮ উইকেটে সংগ্রহ করে ১৬২ রান। শেষ দিকে ক্রিজে নামার জন্য ক্যান উইলিয়ামসন আঙ্গুলে ব্যাথা পেয়ে আগে হাসপাতালে চলে গিয়ে ছিলেন।
এর আগে ২৬৬ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিয়েছেন টাইগাররা। ৪৯.৫ ওভার মোকাবেলা করে ২৬৫ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। মুশফিকুর রহিম (৯০), নাঈম ইসলাম (৮৪), আব্দুর রাজ্জাক (১২), মাশরাফি (৬), রুবেল হোসেন (৩), মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (২৯) , তামিম ইকবাল (৫), আনামুল হক(১৩), মমিমুল হক (০), নাসির হোসেন (১)।
টসে হেরে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ প্রথম বিপদে পড়ে মাত্র ৫ রান করে তামিম ইকবাল টিম সাউদির বলে এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়ায়। টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশের হয়ে ব্যাট হাতে বেশ কিছু রেকর্ড গড়া মুমিনুল হক কোনো বল খেলার আগেই রান আউটের ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন। বাংলাদেশের স্কোর তখন ২ উইকেট ১৭। এনামুল নিজে ১৩ রান করে সাউদির দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফিরে গেলে বাংলাদেশ পড়ে যায় ভীষণ সংকটে।
সেই সংকট থেকেই দলকে উদ্ধার করছেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ও নাঈম ইসলাম। দুইজনই হাফ সেঞ্চুরি করে সেঞ্চুরির পথে আউট হন। চতুর্থ উইকেটে এটি বাংলাদেশের তৃতীয় সেরা জুটি। এই জুটির উপর নির্ভর করে বাংলাদেশ বিপর্যয় থেকে উঠে আসে। নিউজিল্যান্ডের জেমস নেশাম চারটি, টিম সাউদি তিনটি ও কোরি এন্ডারসন দুটি উইকেট পান।
সেঞ্চুরি হলো না মুশফিক-নাঈমের
অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ও নাঈম ইসলাম দলকে বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচালেও নিজেরা কেউ-ই সেঞ্চুরির দেখা পাননি। তাদের মধ্যে মুশফিক ৯০ এবং নাঈম ৮৪ রানে আউট হন। মুশফিক ৯৮ বল মোকাবেলা করে ২টি ছক্কা ও ৮টি চার হাঁকান। অন্যদিকে নাঈম ১১৫ বল মোকাবেলা করে ১২টি চার হাঁকিয়েছেন।