mayermar_02-10-13নিউজবাংলা২৪ডটনেট:: মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সশস্ত্র বৌদ্ধদের হামলায় পাঁচজন মুসলমান নিহত হওয়ার পর মুসলিম এলাকাগুলোতে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় তাদের জানমাল রক্ষা করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মুসলিম নেতারা। মঙ্গলবার উগ্র বৌদ্ধদের নতুন করে শুরু করা দাঙ্গায় অন্তত পাঁচ মুসলমান নিহত হন। শত শত বৌদ্ধের হামলায় এসব মুসলমান নিহত হয়েছেন বুধবার দেশটির পুলিশ জানিয়েছে।

স্থানীয় একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মঙ্গলবারের হামলায় নিহত পাঁচজনের মধ্যে চারজন পুরুষ ও একজন নারী। রাখাইন প্রদেশের থাবিউচাইং এলাকায় নিহতদের এ সংখ্যা নিশ্চিত করেছেন একজন মুসলিম গ্রামপ্রধান। মঙ্গলবারের হামলায় অংশ নেয় প্রায় ৮০০ দাঙ্গাকারী এবং তারা অন্তত ১০০ বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে।
এদিকে, মিয়ানমারের চারটি মুসলিম সংগঠন মুসলমানদের জীবন ও সম্পদ রক্ষার জন্য দেশটির সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। বুধবার সংগঠনগুলো এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, “আমাদের রক্ষা করার জন্য সরকারকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।” বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, “মঙ্গলবারের পাশাবিক হামলার পর আমরা প্রচণ্ড আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছি।” মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট থিন সেইন রাখাইন প্রদেশ সফরে যাওয়ার একইদিন এসব হামলা চালানো হয়।
গত দুই বছর ধরে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে উগ্র বৌদ্ধরা হত্যাকাণ্ড ও ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে আসছে। এসব হামলা ও সহিংসতায় এ পর্যন্ত হাজার হাজার মুসলমান নিহত এবং বহু ঘর-বাড়ি ধ্বংস হয়েছে। যদিও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা মিয়ানমারে মুসলমানদের ওপর উগ্র বৌদ্ধদের হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে কিন্তু মিয়ানমারের ঘটনাবলির ওপর তা কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি। মিয়ানমারের ছয় কোটি জনসংখ্যার মধ্যে মুসলমানদের সংখ্যা মাত্র চার শতাংশ এবং বহু বছর ধরে তারা সেখানে বসবাস করে আসছেন। কিন্তু তারপরও তারা নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
বৌদ্ধদের হামলার মুখে হাজার হাজার রোহিঙ্গা মুসলমান বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। মিয়ানমার ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই রোহিঙ্গা মুসলমানরা বৈষম্যের স্বীকার হচ্ছে। সূত্র: আলজাজিরা, রয়টার্স।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *