eu_flagনিউজবাংলা২৪ডটনেট:: ফ্রান্স ও জার্মানি যৌথভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি গোয়েন্দা তৎপরতার জন্য নতুন নীতিমালা প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছে। নজরদারি কর্মসূচির ব্যাপারে দেশটির সঙ্গে সরাসরি আলোচনারও দাবি জানিয়েছে তারা।  ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সম্মেলনে নেতারা গোপন নজরদারি কর্মসূচির প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যে অবিশ্বাসের পরিচয় দিয়েছে তা সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধের ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।
অ্যাঙ্গেলা মার্কেলের ফোনে মার্কিন গোয়েন্দাদের আড়িপাতার খবর প্রকাশিত হওয়ার পর ইউরোপে যে উত্তেজনা দেখা দেয় তার প্রভাব পড়ে ব্রাসেলসের বৈঠকে। এর আগে ফ্রান্সের কয়েক কোটি লোকের ফোনে নজরদারির খবর প্রকাশ পায়।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর সাবেক কর্মী এডওয়ার্ড স্নোডেনের ফাঁস করা তথ্যের বরাত দিয়ে গত বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ান জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের টেলিযোগাযোগ-সংক্রান্ত গোয়েন্দা সংস্থা ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি (এনএসএ) অন্তত ৩৫ জন বিশ্বনেতার ফোনে আড়ি পেতেছে। হোয়াউট হাউস, পেন্টাগন ও মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তারা ফোন নম্বর জোগাড় করে দিয়ে তাদের সাহায্য করেছেন। ২০০৬ সালের এক দলিলের বরাত দিয়ে গার্ডিয়ান জানায়, বিচ্ছিন্নভাবে নয়, বরং প্রায় ২০০টি ফোন নম্বরে নিয়মিতভাবেই আড়ি পেতেছে এনএসএ। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট দিউমা হুসেফ ও মেক্সিকোর সাবেক প্রেসিডেন্ট ফেলিপে কালদেরনের ফোনে এনএসএর আড়িপাতার খবরে আগেই ওবামা প্রশাসনের বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় তুলেছিলেন বিশ্বনেতারা। মার্কেলের ফোনে আড়িপাতার খবরে আবারও সমালোচনায় সরব হয়েছেন পশ্চিমা সরকার প্রধানরা।
জার্মান পত্রিকা জুদটশে জাইতুং দাবি এনএসএ ও সিআইএর কর্মীরা যৌথভাবে বার্লিনের মার্কিন দূতাবাস থেকে এই নজরদারি চালিয়েছে। বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে গত বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া ইইউ সম্মেলনে নজরদারির বিষয়টি আলোচনার গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে ওঠে।
ইইউ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘‘মার্কিন নজরদারি ইউরোপীয় জনগণের মধ্যে যে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে, সে ব্যাপারে ইউরোপীয় রাষ্ট্রপ্রধানরা উদ্বিগ্ন। তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইউরোপের সম্পর্ক ও তার উপকারিতা নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইউরোপের বিশ্বাসের ঘাটতি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যৌথ গোয়েন্দা অংশীদারিতে ব্যাঘাত সৃষ্টি করবে। তারা এর বিরুদ্ধে হুশিয়ারিও উচ্চারণ করেছেন।’’ ক্ষুব্ধ মার্কেল বলেন, ‘‘বন্ধুদের মধ্যে গোয়েন্দাগিরি ঠিক নয়। আংশীদারদের মধ্যে বিশ্বাস খুবই দরকার এবং এই বিশ্বাস আবার স্থাপন করতে হবে।’’
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলন্দ যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি গোয়েন্দা নজরদারি-সংক্রান্ত নতুন আচরণবিধি তৈরির আহ্বান জানান।
এদিকে নজরদারি নিয়ে সরাসরি কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জে কারনি বলেন, ‘‘এ ব্যাপারে আমরা প্রকাশ্যে কিছু বলব না। আমরাও সত্য জানতে চাই।’’
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকা জানায়, স্নোডেনের হাতে চলে যাওয়া দলিলগুলো প্রকাশিত হলে বিদেশি গোয়েন্দাদের সঙ্গে সহযোগিতার বিশদ তথ্য ফাঁস হয়ে যেতে পারে। ইরান, রাশিয়া ও চীনের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহের খুঁটিনাটি ফাঁস হয়ে যাওয়ারও আশঙ্কা করছে তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *