নিউজবাংলা২৪ডটনেট:: চট্টগ্রামে যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হলো বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পর চট্টগ্রামের প্রথম উড়াল সড়ক দিয়ে যান চলাচল শুরু হচ্ছে। ২০১০ সালের ২ জানুয়ারিতে ১৩৩১ মিটার দীর্ঘ এ উড়াল সড়কটির উদ্বোধনও করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পৌনে চার বছরে এ বৃহৎ প্রকল্পের নির্মাণ প্রক্রিয়ার সাথে জড়িয়ে আছে বিপুল জনপ্রত্যাশা, ডজনাধিক নিরীহ মানুষের মৃত্যু আর দীর্ঘদিনের অসহনীয় জনদুর্ভোগ।
এর আগে বন্দরনগরীতে চট্টগ্রাম বন্দর এলাকায় একটি বিশেষায়িত ফ্লাইওভারের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম সড়ক যোগাযোগ খাতের উড়াল সেতু সংস্কৃতিতে অভিষিক্ত হলেও বহদ্দার ফ্লাইওভারটি হচ্ছে সর্বসাধারণের জন্য নির্মিত নগরীর প্রথম ফ্লাইওভার। ক্রমসম্প্রসারমাণ বন্দরনগরীর যানজট পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের নিরিখে শহরের অন্যতম ট্রাফিক যানজটপ্রবণ এলাকা বহদ্দারহাটে এ ফ্লাইওভার নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিড়িএ) তার নিজস্ব তহবিল থেকে এ প্রকল্পের পুরো নির্মাণ ব্যয় যোগান দেয়। সিডিএ চেয়ারম্যান ও নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুস ছালামের মেয়াদকালে এটি সিড়িএ’র বাস্তবায়িত বড় প্রকল্পের অন্যতম। গুরুত্বপূর্ণ লোকেশনের কারণে বহদ্দারহাট মোড়ের যানজট নগরীর চান্দগাও আবাসিক এলাকা , বাস টার্মিনাল , মুরাদপুর, ষোলশহর , জিইসি মোড় পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।
অন্যদিকে , কর্ণফুলী নদীর ওপর তিনশ’ কোটিরও বেশি টাকা খরচ করে শাহ আমানত সেতু নির্মাণ করা হলেও বহদ্দারহাট মোড়ের যানজটের কারণে সেতু নির্মাণের উদ্দেশ্য ভেস্তে যাওয়ার উপক্রম হয়। সকাল থেকে গভীর রাত অবধি বহদ্দারহাটে যানজট লেগে থাকে। যার ধকল সামলাতে গিয়ে এশিয়ান হাইওয়ে এবং চট্টগ্রাম কক্সবাজার সড়কে যান চলাচলে স্থবিরতা বিরাজ করে। এ কারণে বহদ্দার হাট ফ্লাইওভার শুধু শহরে নয়,কালুরঘাট শিল্পাঞ্চল, উত্তর চট্টগ্রামের একাংশ ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের সুচনা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। গত বছরের ২৪ অক্টোবরের গার্ড়ার ধ্বসে ১৫ জনের মৃত্যু ও অনেকের আহত হওয়া, খানাখন্দ, অপরিসর সড়কের কারণে নির্মানের পুরো সময় চান্দগাও , কালুরঘাট শিল্পাঞ্চালসহ রাঙুনিয়া, কাপ্তাইমুখী মানুষের দুর্ভোগ আর টেন্ডার ও নির্মাণ কোয়ালিটি নিয়ে বিতর্কের মুখে শেষ পর্যন্ত সেনাবাহিনীর সহায়তার এর নির্মাণ কাজ শেষ হলো।
এশিয়ান হাইওয়ের মুরাদপুর মোড়ের কাছে রওশন বিল্ডিং এর সামনে থেকে বহদ্দারহাট –কর্ণফুলী সেতু সংযোগ সড়কের এক কিলোমিটার পর্যন্ত ১৩৩১ মিটার দীর্ঘ ফ্লাইওভারটির প্রস্থ ১৪ মিটার। মোট ২৪টি পিলারের ওপর চার লেন প্রশস্থ ফ্লাইওভারটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১৪৫ কোটি টাকা।