Oyce_jonyনিউজবাংলা২৪ডটনেট:: ঐশীর বয়ফ্রেন্ড আসাদুজ্জামান ওরফে জনি টাকার বিনিময়ে নিজের বউকে ভাড়ায় খাটাতো। ড্যান্স পার্টির আয়োজন করে আমন্ত্রণ জানাতো ধনাঢ্য ব্যবসায়ী ও বিত্তশালী যুবকদের। গানের তালে তালে নাচতো ঐশী, নাচতো জনির বউ ও তাদের ‘স্টেপ আপ’ গ্রুপের আরও ডজনখানেক তরুণী। এরপর নির্ধারিত রেটের ওপরে অতিরিক্ত দাম হাঁকিয়ে দর্শকরা যে যার মতো বেছে নিতো ওই তরুণীদের। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য জানিয়েছে জনি। পাঁচ দিনের রিমান্ডের তৃতীয় দিনে গতকাল ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জনি আরও জানায়, তার ‘স্টেপ আপ’ নামের ড্যান্স বহরে নিয়মিত ১৪ তরুণীর আসা-যাওয়া ছিল। এদের মধ্যে তার বিবাহিত স্ত্রী আইরিন ছিল সবচেয়ে কার্যকরী। নাচ ও রূপের তুলনায় গ্রুপের সেরা। তার উপস্থিতিতে দর্শকদের উত্তেজনা বেড়ে যেতো। পছন্দের দ্বিতীয় তালিকায় ছিল ঐশী। বাচনভঙ্গিতে মন জয়ের ক্ষমতা ছিল তার। এছাড়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন ছাত্রী ছিল স্টেপ আপের সদস্য। বাকি ৯ তরুণীর বেশির ভাগই অল্প শিক্ষিত ও স্বল্প উপার্জনকারী। গোয়েন্দারা জানান, ঐশীর বয়ফ্রেন্ড জনি মূলত অন্ধকার জগতের বাসিন্দা। অভিজাত হোটেল ও ফ্ল্যাটে যাতায়াতকারী কল গার্লের মিডিয়া। তিন বছর ধরে এই অনৈতিক পেশায় যুক্ত সে। তার প্রথম শিকার ছিল সুন্দরী গার্মেন্টকর্মী আইরিন। মেরুল বাড্ডা এলাকায় আড্ডা দিতে দিতেই তার সঙ্গে পরিচয়। অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই গড়ে তোলে ঘনিষ্ঠ সখ্য। কথিত বিয়ের মাধ্যমে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করে। রামপুরা ডিআইটি প্রজেক্ট এলাকায় বাসাভাড়া করে বসবাস শুরু করে। এক পর্যায়ে আইরিনকে বিদেশে চাকরি দেয়ার নাম করে ড্যান্স পার্টিতে নিয়ে যায়। কোন রকমে ‘শরীর দোলানো’ শিখিয়ে হাজির করে বিভিন্ন পার্টিতে। সেখানে পানীয় ও ইয়াবা সেবনকারী বিত্তশালী যুবকদের মনোরঞ্জনের কাজে ব্যবহৃত হয়। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এডিসি মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, ডিজে ও ড্যান্সপার্টির আড়ালে উঠতি বয়সী তরুণীদের নিয়ে নানা ধরনের অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছিল জনি। তার সিন্ডিকেটে যুক্ত বেশ কয়েকজন তরুণীর নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা সবাই মাদকাসক্ত ও অসামাজিক পেশায় জড়িত ছিল। তদন্ত সূত্র মতে, রাজধানীর বিভিন্ন গার্মেন্ট ও বিভিন্ন জেলা শহরের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে আসা চাকরিপ্রার্থী সুন্দরী তরুণীদের টার্গেট করতো জনির সিন্ডিকেট। এ ছাড়া অনেক উচ্চশিক্ষিত তরুণীদের ভাল বেতনের চাকরি ও বিদেশে পাঠানোর নাম করে দলে ভেড়াতো। আধুনিকতার দোহাই দিয়ে পশ্চিমা সংস্কৃতির আদলে গড়ে তুলতে ড্যান্স পার্টিতে নিয়ে যেতো। এরপর ধীরে ধীরে ইয়াবা ও বিভিন্ন মাদকে নেশাগ্রস্ত করে বিপথে নামিয়ে আনতো। একই কৌশলে পুলিশ দম্পতির কন্যা ঐশী রহমানকে দলে ভিড়িয়েছিল জনির সিন্ডিকেট। নেশার টাকা যোগাড় করতে অনেক পুরুষের অন্তরঙ্গ সঙ্গী হতে বাধ্য করেছিল। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অনেক স্বল্প বেতনের উচ্চাকাঙক্ষী তরুণীরাও নীতিনৈতিকতার বিসর্জন দিয়ে এ পেশায় নেমে পড়েছে। এদের মধ্যে যারা মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে, তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার পথ প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। একদিকে থাকা-খাওয়া অন্যদিকে নেশার টাকা যোগাড় করতে জনির নিয়ন্ত্রণে থাকতে বাধ্য হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *