নিউজবাংলা২৪ডটনেট:: চট্টগ্রামের বন্দরটিলা, নিউমুরিং, মিস্ত্রীপাড়া, পাহাড়তলী, চেরাগী পাহাড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৮ ভুয়া চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এইচএম আনোয়ার পাশার নেতৃত্বাধীন ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের প্রত্যেককে দুই বছর করে কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে প্রত্যেককে তিন মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন।
শনিবার সন্ধ্যায় এই আট ভুয়া চিকিৎসককে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারেস পাঠানো হয়েছে। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন র্যাবের চট্টগ্রাম জোনের উপ-অধিনায়ক স্কোয়াড্রন লিডার নাজমুল হক। ভ্রাম্যমাণ আদালতকে সহযোগিতা করেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি মেডিকেল অফিসার ডা. এইচএম আহসানুল হক।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- এমএইচ কবির, এমআর নিজামী, হারুন-অর-রশিদ, এমজি ভূঁইঞা, অসীম সেন, গোপাল মজুমদার, আর জে সাহা (জীবন), নেপাল দাশ গুপ্ত। নগরীর জামালা খানে একটি রোগ নির্ণয় কেন্দ্রে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের চট্টগ্রাম জোনের অধিনায়ক কমান্ডার সাহেদ করিম জানান, নগরীর বিভিন্ন স্থানে শনিবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ৮ ভুয়া চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করা হয়। গত এক মাস ধরে র্যাবের একটি গোয়েন্দা টিম চট্টগ্রামের এসব ভুয়া চিকিৎসকের তালিকা তৈরি করে। তালিকায় ১৪ জনের নাম ও ঠিকানা চিহ্নিত করার পর এ অভিযান পরিচালান করা হয়।
নিউজবাংলা২৪ডটনেট কে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এইচএম আনোয়ার পাশা জানান, র্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার আট জন মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল অ্যাক্ট-২০১০ অনুযায়ী প্রত্যেককে দু’বছরের কারাদন্ড এবং এক লাখ টাকার অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে। অনাদায়ে আরো তিন মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। তাদের সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। দণ্ডিতরা স্বীকার করেন, চট্টগ্রাম ও আশেপাশে এলাকায় তাদের মতো শতাধিক ভুয়া এমবিবিএস ডাক্তার রয়েছে। তারা প্রায়শই স্থান পরিবর্তন করে এবং কৌশলে সহজ সরল মানুষকে ফাঁকি দিয়ে ব্যবসা চালায়।
নামের পাশে এমবিবিএস, এমডি (ডক্টর অব মেডিসিন), পিএইচডি, পিজিটি, মেডিসিন, চর্ম, শিশু প্রভৃতি বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ডিগ্রীর মিথ্যা বিবরণ দিয়ে প্রতারণা করছিলেন তারা। অধিকাংশেরই তেমন কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই। অনেকে বিজ্ঞান বিষয়ে পড়াশুনা না করেও এমবিবিএস ডাক্তার বনে গেছেন।
আটকরা আরো স্বীকার করেন, তারা কিছু অসাধু ব্যক্তির মাধ্যমে সার্টিফিকেট কিনেছেন। এসব ভুয়া ডাক্তারের বিভিন্ন স্বার্থ রক্ষায় একটি সংগঠনও রয়েছে। ওই সংগঠনের সভাপতি এমএইচ কবির এবং সেক্রেটারি এমজি ভূঁইঞা। তাদের সহজে যাতে কেউ ধরতে না পারে সে জন্য এ সংগঠনটি কাজ করছে । তাদের নামের আগে ডাক্তার পদবী লেখার অনুমতি চেয়ে উচ্চ আদালতে তারা রিট করেছেন বলেও জানান।
চট্টগ্রামে র্যাবের গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, এরকম ৭০ জনের একটি তালিকা করা হয়েছে। যারা এ অভিযানের পর গা ঢাকা দিয়েছে তারা যদি ফের এ ধরনের প্রতারণা শুরু করে তবে তাদের বিরুদ্ধেও অভিযান শুরু করা হবে বলে জানান কমান্ডার এম সাহেদ করিম।