polytechnic_khulnaনিউজবাংলা২৪ডটনেট:: খুলনায় পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সোমবার পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশ সাংবাদিকসহ অর্ধশত ছাত্র আহত হয়েছে। সংঘর্ষকালে নগরীর খালিশপুর গাবতলা ও বৈকালী এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ সময় পুলিশ দুই শতাধিক রাবার বুলেট ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ১০জন ছাত্রকে আটক করেছে। আহতদেরকে বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। খালিশপুরস্থ সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনের খুলনা-যশোর পুরাতন সড়কে সোমবার দুপুরে সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা কাঠের গুড়ি ফেলে বিক্ষোভ করলে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময় পুলিশের টেয়ারসেল, রাবার বুলেট ও ছাত্রদের ইটপাটকেল নিক্ষেপে এলাকায় চরম আতংক ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে পুলিশ যখন বিক্ষুব্ধ ছাত্রদের সামাল দিতে চেষ্টা করছিল তখন দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে ১৩ নন্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি এসএম মোর্শেদ আহমেদ মনির নেতৃত্বে কিছু সংখ্যক উচ্ছৃঙ্খল যুবক লাঠিসোটা নিয়ে খালিশপুর আলমনগরস্থ সিটি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ভাংচুর চালায়। এ সময় তারা  ইনস্টিটিউট থেকে কয়েকটি কম্পিউটার, এলসিডি মনিটরসহ ল্যাবরেটরী থেকে ব্যবহারিক কাজের মূল্যবান যন্ত্রাংশ লুট করে নিয়ে গেছে বলে শিক্ষকরা দাবি করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ছাত্ররা জানায়, সোমবার সকালে সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ৫ সহস্রাধিক শিক্ষার্থী একযোগে বাইরে বের হয়ে তাদেরকে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার পদ না দেয়ার প্রতিবাদ জানায়। এক পর্যায়ে তারা পলিটেকনিক মোড় থেকে জংশন হয়ে বৈকালী মোড়ে গিয়ে বিক্ষোভ করে। এ সময় খুলনা-যশোর পুরাতন সড়কের গাবতলা ও মহাসড়কের বৈকালী মোড়ে কাঠের গুড়ি ফেলে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা এ সময় একটি (ঢাকা মেট্রো গ-১৭-৭৭৮৮) প্রাইভেটকারসহ ট্রাক ও বাস ভাংচুর করে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সাজোয়াযান আনলে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। সাজোয়াযান চলে গেলে বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা আবারও বিক্ষোভ শুরু করে। এক পর্যায়ে পুলিশের সাথে ছাত্রদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশ দুইশতাধিক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ারসেল এবং ছাত্ররা মুহূর্মুহুর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে পুলিশ সাজেন্ট আবুল বাশার ও কনস্টেবল শহিদুল ইসলাম, স্থানীয় দৈনিক পূর্বাঞ্চলের ফটো সাংবাদিক এমএ হাসান ও সময়ের খবরের ফটো সাংবাদিক আর জি উজ্জলসহ অর্ধশতাধিক ছাত্র আহত হয়েছে। আহতদেরকে বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। সংঘর্ষকালে পুলিশ খুলনা পলিটেকনিকের ছাত্র সবুজ, রুবেল, শেখর মন্ডল, আল ফাহাদ, আকরাম হোসেন, মহিবুল্লাহ, আব্দুর রহীম ও অপূর্ব এবং সিটি পলিটেকনিকের ছাত্র জুয়েল ও ম্যানগ্রোভের ছাত্র রুবেলকে আটক করে।
এর আগের দিন রবিবার পলিটেকনিক ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয়, চতুর্থ, ৬ষ্ঠ ও অষ্টম পর্বের বোর্ড ফাইনাল পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা শুরুর প্রথমদিনের সকাল ও দুপুরের দু’শিফটের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা বর্জন করে। সকাল ৯টা থেকেই শিক্ষার্থীরা স্ব স্ব ক্যাম্পাসে অবস্থান নেয়। পরীক্ষা নেয়ার জন্য শিক্ষকরা এলে কলেজের প্রধান ফটক ও ভেতরের গেট বন্ধ করে দেয়া হয়। পরে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা লাঠিসোঠা নিয়ে সড়ক অবরোধ ও ম্যানগ্রোভ ইনস্টিটিউট ভাংচুর করে। পরে পুলিশ পরস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ছাত্ররা বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি চলবে। অবিলম্বে দাবি মেনে নেয়ার জন্য তারা সরকারের প্রতি আহবান জানান।
এ ব্যাপারে খালিশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকুমার বিশ্বাস রাবার বুলেট ও টিয়ারসেল নিক্ষেপের কথা স্বীকার করে বলেন, সারাদিন ধরে বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের সাথে ছাত্রদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। সব জায়গা থেকে ইনফরমেশন নিয়ে হিসাব করে জানানো যাবে। আর এ ঘটনায় কতজনকে আটক করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। তবে তিনি তাদের কয়েকজন পুলিশ সদস্যের আহতের কথা বললেও নাম জানাতে পারেনি। তিনি বলেন, বিকেল পর্যন্ত সংঘর্ষ অব্যাহত ছিল।
# ৩০-০৯-১৩

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *