আবারও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি নিয়ে বেকায়দায় পড়েছে ভারত Reviewed by Momizat on . নিউজবাংলা২৪ডটনেট:: ২০০৮ সালের পর আবারও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি নিয়ে বেকায়দায় পড়েছে ভারত। এর আগে মনমোহন সিংয়ের ইউপিএ সরকার পরমাণু চুক্তি সম্পাদন নিউজবাংলা২৪ডটনেট:: ২০০৮ সালের পর আবারও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি নিয়ে বেকায়দায় পড়েছে ভারত। এর আগে মনমোহন সিংয়ের ইউপিএ সরকার পরমাণু চুক্তি সম্পাদন Rating: 0
You Are Here: Home » আন্তর্জাতিক » আবারও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি নিয়ে বেকায়দায় পড়েছে ভারত

আবারও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি নিয়ে বেকায়দায় পড়েছে ভারত

nuclear_plantনিউজবাংলা২৪ডটনেট:: ২০০৮ সালের পর আবারও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি নিয়ে বেকায়দায় পড়েছে ভারত। এর আগে মনমোহন সিংয়ের ইউপিএ সরকার পরমাণু চুক্তি সম্পাদন করতে গিয়ে বামেদের সঙ্গী ছাড়া হয়। বামেরা সমর্থন প্রত্যাহার করার ফলে ক্ষমতায় আসার চার বছরের মধ্যেই বিপন্ন হয়ে পড়ে প্রথম ইউপিএ সরকার। সেই পরমাণু চুক্তি ঘিরে আরও একবার প্রবল ঝড়ের মুখে পড়ে গেল মনমোহন সিংয়ের দ্বিতীয় ইউপিএ সরকার।কাকতালীয়ভাবে এবারও সরকারের বয়স সেই চার বছরই।চলতি মাসের শেষে যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। তার ঠিক আগেই ভারত-মার্কিন পরমাণু চুক্তিতে বড়সড় পরিবর্তন করতে চেয়ে বিপাকে পড়েছে সরকার। কয়েক দিন আগে অ্যাটর্নি জেনারেল গুলাম বাহনবতীর মতামত চেয়ে পাঠায় পরমাণু শক্তি মন্ত্রক। ভারতে পরমাণু কেন্দ্র গড়তে ফ্রান্স ও রাশিয়ার যে সমস্ত সংস্থা বিনিয়োগ করবে তাদের বিশেষ কিছু ছাড়ের ব্যবস্থা করা যায় কি না সেই বিষয়ে বাহনবতীর পরামর্শ চাওয়া হয়। এখানেই বেধেছে বিতর্ক। বর্তমান আইন অনুযায়ী কোনোদুর্ঘটনা ঘটলে এই বিদেশি সংস্থাগুলি বিপুল ক্ষতিপূরণ দিতে চুক্তিবদ্ধ। কিন্তু চুক্তির এই অংশ নিয়ে গোড়া থেকেই আপত্তি জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও রাশিয়া। তাদের বক্তব্য ছিল ভারতের কঠোর আইনের ফলে ব্যবসায়িক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে সে দেশের সংস্থাগুলি। ক্ষতিপূরণের শর্ত থাকায় চুল্লি তৈরি ও অন্যান্য পরিকাঠামোর খরচও অনেক বেড়ে যাবে বলে আপত্তি জানিয়েছে তারা। অভিযোগে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর মার্কিন সফরের ঠিক আগে অ্যাটর্নি জেনারেলের মতামত চেয়ে ওই শর্তগুলিকে লঘু করে দিতে চাইছে সরকার। এ ব্যাপারে ওবামা প্রশাসনের চাপের কাছে প্রধানমন্ত্রী নতি স্বীকার করেছেন বলেও সরব হয়েছে বিরোধীরা। দুই দফায় টানা নয় বছর ক্ষমতায় থাকা মনমোহন সিংয়ের জনপ্রিয়তা এই মুহূর্তে তলানিতে। এর মধ্যেই এই অভিযোগে সরকারের ভাবমূর্তি বিপন্ন হয়ে পড়ায় তড়িঘড়ি ময়দানে নেমে পড়ে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব।বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদ বিবৃতি দিয়ে বলেন, ‘সংসদ যে আইন ও নিয়ম তৈরি করেছে তা লঙ্ঘন করার ক্ষমতা আমাদের নেই। সুতরাং এমন কোনো প্রস্তাব অকল্পনীয়।’ মনমোহন সিংয়ের দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী ভি নারায়ণস্বামীও জানান ‘অ্যাটর্নি জেনারেল তার মতামত দিয়েছেন। তবে সংসদের তৈরি আইনকে পাশ কাটিয়ে কিছুই করা হবে না৷’

তবে সরকার সাফাই দেওয়ার চেষ্টা করলেও বিতর্ক চাপা পড়েনি। ২০০৮ সালে মনমোহন সিংয়ের সরকারের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করেছিলেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট।তিনি এদিন বলেন, ‘সংসদের তৈরি আইন ভাঙার বেআইনি চেষ্টা চলছে। যতবার আমাদের প্রধানমন্ত্রী ওয়াশিংটন যান, ততবারই তিনি আমেরিকার ইচ্ছে পূরণ করেন।’

বিজেপি মুখপাত্র রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, ‘বিদেশি কয়েকটি সরবরাহকারী সংস্থাকে সুবিধা করে দিতে প্রোটোকল ভাঙতে চাইছে সরকার। ভারত-মার্কিন পরমাণু চুক্তি নিয়ে এতদিনেও কিছু করে উঠতে পারেনি তারা। তাই তাড়াহুড়ো করে এই সমস্ত পদক্ষেপ করা হচ্ছে৷’

এর আগেও মনমোহন সিংয়ের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি দুর্বলতা দেখানোর অভিযোগ উঠেছে একাধিকবার। প্রথম ইউপিএ সরকারের সময় সরকারের সহযোগী বামেরাও তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেন। গত বছর খুচরা ব্যবসায় বিদেশি বিনিয়োগের ছাড়পত্র দেওয়ার জন্য ইউপিএ ছেড়ে বেরিয়ে আসেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সে সময়ও বামসহ বিরোধীরা মনমোহনের অতিরিক্ত ‘মার্কিন প্রীতি’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন।

চুক্তির এই অংশ নিয়ে বুধবার বাহনবতী জানিয়েছিলেন, বিদেশ থেকে পরমাণু চুল্লি কেনার বাণিজ্যিক চুক্তির ক্ষেত্রে প্রয়োজনে এই দায়বদ্ধতার শর্ত পরিবর্তন করতে পারবে নিউক্লিয়ার পাওয়ার কর্পোরেশন। তবে সরকারের একাংশ মনে করছে, চাইলেও চুক্তির এই অংশ লঙ্ঘন করতে পারবে না ভারত। কারণ সেক্ষেত্রে সংসদে পাস করা নিজেদের আইনই ভাঙতে হবে সরকারকে।

এদিকে ভারতীয় আইনের এই কঠোর ধারা নিয়ে বরাবরই আপত্তি তুলেছে যুক্তরাষ্ট্র। কুড়ানকুলামের৩ ও ৪ নম্বর পরমাণু চুল্লিকে এই আইনের আওতায় আনতে প্রত্যাখ্যান করেছে রাশিয়া। একই আপত্তি ফ্রান্সেরও। গত বছরই দায়বদ্ধতার এই ধারাগুলিতে কিছু বদল করেছিল সরকার। বর্তমানে এই আইন বলে পাঁচ বছরের জন্য এই দায়বদ্ধতার শর্তে আবদ্ধ থাকবে বিদেশি সংস্থাগুলি। কিন্তু সেটাও আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে আপত্তি রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশগুলির।

About The Author

Number of Entries : 3358

Leave a Comment

Scroll to top